আপনি কি হাড়ের ব্যথায় ভুগছেন? দুর্বল হাড়ের এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সব ধরনের চেষ্টা করেও পাচ্ছেন না স্থায়ী কোন সমাধান? তাহলে খুব সম্ভবত আপনি ছোটবেলায় কম ক্যালসিয়াম গ্রহণ করেছিলেন।
ক্যালসিয়াম এর অভাবে হাড় ক্ষয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরণের রোগ, যেমন- অস্টিওপোরোসিস হতে পারে। এছাড়াও ক্যালসিয়ামের অভাবে-
* বাচ্চাকে নিয়ন্ত্রন করা কঠিন হয়ে যেতে পারে। তার মাঝে বিভিন্ন ধরণের অস্বাভাবিকতা যেমন- ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন, অস্থিরতা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে
* বাচ্চার দাঁত সুগঠিত হতে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় লাগার পাশাপাশি দাঁতে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা যেমন- দাঁতের মাড়ি দুর্বল হয়ে যেতে পারে
* বাচ্চা অমনোযোগী হয়ে যেতে পারে
* বাচ্চার খাদ্যে অনীহা দেখা দিতে পারে
* বাচ্চার রাতের ঘুমে অসুবিধে হতে পারে
* বাচ্চার খিঁচুনি হতে পারে
আপনি যদি এসব সমস্যা থেকে আপনার সন্তানকে মুক্ত রাখতে চান, তবে এখন থেকেই তার খাবারে রাখুন পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম। সন্তানের বিকাশে ক্যালসিয়াম খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। এটি শুধু বাচ্চাদের হাড়ই শক্ত করে, তা না; পেশিকেও করে সুগঠিত। এছাড়া ক্যালসিয়াম হার্টকেও হেলদি রাখে এবং স্নায়ুস্পন্দন স্থানান্তরে বা নার্ভ ইম্পালস ট্রান্সমিশনেও সহায়তা করে।
হাড় ও পেশি সুগঠিত করার একমাত্র ও আদর্শ সময় হলো মানুষের ছোটবেলা। এ সময়টা পেরিয়ে গেলে পরবর্তীতে যতই চেষ্টা করা হোক না কেন, তেমন লাভ হয় না। তাই এ সময়ে ক্যালসিয়াম আপনার সন্তানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বয়স কম থাকতেই প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা।
আপনার শিশুর জন্য গড়ে নিম্নলিখিত পরিমাণ ক্যালসিয়াম গ্রহণ করা প্রয়োজন:
* ১-৩ বছরের শিশুর জন্য দৈনিক ৭০০ মি:গ্রা: ক্যালসিয়াম
* ৪-৮ বছরের শিশুর জন্য দৈনিক ১০০০ মি:গ্রা: ক্যালসিয়াম
* ৯-১৮ বছরের শিশু ও কিশোরের জন্য দৈনিক ১৩০০ মি:গ্রা: ক্যালসিয়াম
শিশুদের জন্য বুকের দুধ হল ক্যালসিয়ামের একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎস। তাদের দেহে পর্যাপ্ত সূর্যারশ্মি পাওয়ার ব্যাপারটিও নিশ্চিত করুন। সূর্যারশ্মি ভিটামিন ডি তৈরিতে সাহায্য করে যা শরীরে সঠিক ভাবে ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে।
নিম্নলিখিত খাদ্যগুলিতে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম:
* প্রতি ২৩৭ মি.লি. দুধে আছে ৩০০ মি:গ্রা: ক্যালসিয়াম
* প্রতি ১৭৭ মি.লি. লো ফ্যাট দই-তে আছে ৩১১ মি:গ্রা: ক্যালসিয়াম
* প্রতি ৪৩ গ্রাম চ্যাডার চিজ-এ আছে ৩০০ মি:গ্রা: ক্যালসিয়াম
* প্রতি ২৮ গ্রাম কাজুবাদামে আছে ৮০ মি:গ্রা: ক্যালসিয়াম
* প্রতি ১১৩ গ্রাম পনিরে আছে ৭০ মি:গ্রা: ক্যালসিয়াম
* প্রতি ১১৮ মি.লি. সেদ্ধ/রান্না ব্রকলিতে আছে ৩৫ মি:গ্রা: ক্যালসিয়াম
* প্রতি ১১৮ গ্রাম ঢ্যাঁড়শে আছে ১৭২ মি:গ্রা: ক্যালসিয়াম।
* প্রতি ১০০ গ্রাম সয়াবিনে আছে ১৭৫ মি:গ্রা: ক্যালসিয়াম
* প্রতি ১০০ গ্রাম তিলে আছে ১০০০ মি:গ্রা: ক্যালসিয়াম
আপনার সন্তানের সার্বিক বিকাশে এসব খাদ্য-উপাদান দিয়ে খাবার তৈরি করা খুবই জরুরী। বিশেষ করে দুধ, তার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকা উচিত। তবে অনেক বাচ্চা আছে যারা ল্যকটোজ ইনটলারেন্ট অর্থাৎ তাদের শরীরে দুধের তৈরি খাবার ভালো হজম হয় না। সেক্ষেত্রে বাকি খাদ্যগুলো থেকে বেছে নিন পছন্দমত যেকোন একটি।
এছাড়াও তার খাবারে সবসময় রাখুন ভিটামিন ডি–৩ সমৃদ্ধ খাবার; যেমন পনির, ডিম ইত্যাদি। ভিটামিন ডি–৩ শরীরের ক্যালসিয়াম গ্রহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আসুন, হাড়ের সমস্যা ও শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি কমাতে শুধু ওষুধে নির্ভরশীল না হয়ে এসব খাবার নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করি ও আমাদের সন্তানদের হেলদি ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করি।
2 Comments
salman
Hi
salman
Hello